কম্পিউটারের বিভিন্ন ডিভাইসের নাম কি কি ?
কম্পিউটারের বিভিন্ন ডিভাইসের নাম কি কি : কম্পিউটারের ডিভাইস গুলি কি কি ?
উত্তর : নিম্নে কম্পিউটারের বিভিন্ন ডিভাইসের নাম বিবরণসহ উল্লেখ করা হলো :
> বন্ধুরা, আমরা কম্পিউটারের বিভিন্ন ডিভাইসের নাম কি কি : কম্পিউটারের ডিভাইস গুলি কি কি পোস্টে আপনাকে স্বাগত। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন।
১। সিপিইউ (CPU) : ইংরেজি CPU = (সেন্ট্রাল প্রোসেসিং ইউনিট- Central Processing Unit) বা কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়া অংশ বা কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়া বিভাগ। সিপিইউ হলো কম্পিউটারের প্রাণ। অপারেটরের দেওয়া তথ্য কম্পিউটার দ্রুত গতিতে, নির্ভূলভাবে এবং কম সময়ে তথ্য প্রক্রিয়া করে থাকে। কম্পিউটারে দেওয়া যাবতীয় তথ্যাদি সিপিইউ প্রক্রিয়া করে থাকে। সিপিইউ ছাড়া কম্পিউটার চলে না। কম্পিউটার চালনা করার সময় সিপিইউ গরম হয়ে যায়। তাই সিপিইউকে ঠান্ডা রাখার জন্য কুলিং ফ্যান ব্যবহার করা হয়।
২। মনিটর : টিভির মত দেখতে যার ভিতর ছবি, ভিডিও, গেম, প্রোগ্রাম ইত্যাদি দেখা যায় তাকে মনিটর বলে। মনিটর একটি আউটপুট ডিভাইস। এর মাধ্যমে আমরা কম্পিউটারের প্রক্রিয়াকৃত কাজ গুলি সহজে দেখতে পারি। বিজ্ঞান মনিটর আবিষ্কার করে আমাদের কাজকে আরো বেশি বেগবান ও শক্তিশালী করেছে। কারণ, মনিটর না থাকলে আমরা কোন তথ্য দেখতে পারতাম না। মনিটরের মাধ্যমে তথ্য দেখে তার ভূল সঠিক নির্ণয় করা সহজ হয়। বাজারে বিভিন্ন প্রকার মনিটর পাওয়া যায়। যা দ্বারা আমরা কম্পিউটার চালাতে পারি। নিম্নে কয়েক প্রকার মনিটরের বিবরণ দেওয়া হলো : পিকচার টিউবের উপর ভিত্তি করে মনিটর দুই প্রকার। যথা : ক) সিআরটি মনিটর: যে মনিটরে পিকচার টিউব লাগানো থাকে এবং যে মনিটরের পাছা পিছনের দিকে চওড়া তাকে সিআরটি মনিটর বলে। বর্তমানে সিআরটি মনিটরের উৎপাদন বন্ধ। কারণ, এই প্রকার মনিটর বেশি ওজন ও বেশি জায়গা দখল করে। স্থান সংকুলান বহনে অসুবিধা হওয়ায় এই প্রকারের মনিটরের উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় বাজার এই মনিটর নতুন পাওয়া যায় না।
খ) ফ্ল্যাট প্যানেল মনিটর এই শ্রেণীর মনিটর বা ফ্ল্যাট প্যানেল মনিটরে কোন পিকচার টিউব থাকে না। পিকচার টিউব (Picture Tube) না থাকায় এই শ্রেণীর মনিটর খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কারণ, এই মনিটর ফ্ল্যাট বা চ্যাপ্টা হওয়ায় কম জায়গা দখল করে এবং দেখতেও সুন্দর আর ওজনেও হালকা। তাছাড়া এই শ্রেণীর মনিটর বিদ্যুৎ ও কম খরচ করে। তাই সব দিক থেকেই সুবিধা থাকায় ফ্ল্যাট প্যানেল মনিটরের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩। কী-বোর্ড: ক্যালকুলেটরের মত দেখতে বিভিন্ন অক্ষরের এবং অন্যান্য বাটুন যুক্ত ডিভাইসটি যেটি কম্পিউটার টাইপ বা লেখা লেখির ক্ষেত্রে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় তাকে কী-বোর্ড (Keyboard) বলে। কী-বোর্ডে ইংরেজি ২৬টি অক্ষর, ৯টি ডিজিট বা সংখ্যা, Ctrl (Control-কন্ট্রোল), Alt (Alter- অল্টার), উইন্ডোজ লোগো কী (বাম সাইডে Ctrl এবং Alt এর মাঝখানের বাটুনটি হলো উইন্ডোজ লোগো কী।
অল্টার এবং কন্ট্রোল কী দ্বারা বিভিন্ন কাজ খুব দ্রুত গতিতে এবং কম সময়ে করা হয়ে থাকে। অল্টার কী দ্বারাও বিভিন্ন কাজ সহজে এবং দ্রুত গতিতে করা যায়। পাশাপাশি উইন্ডোজ লোগো কী দ্বারাও বিভিন্ন কাজ করা যায়। এছাড়াও ডানপাশে তীর → ↑↓← চিহ্নযুক্ত চারদিকের চারটি ডিরেকশন (Direction Key) কী। ইহা ছাড়াও আছে ESC (ইস্কেপ কী) এবং ফাংশন কী (Function Key) F1, F2, F3, F4, F5, F6, F7, F8, F9, F10, F11, F12. এই কী গুলিকে ফাংশন কী বলে। আরো আছে- শিফট কী (Shift Key), ট্যাব কী - Tab Key, (ক্যাপস লক কী- Caps Lock Key, ইন্টার কী- Enter Key, Numaric Key, (স্পেসবার) নিউমেরিক কী) Space Bar (স্পেসবার) ইত্যাদি। বাজারে বিভিন্ন প্রকার কী-বোর্ড কিনতে পাওয়া যায়। তন্মধ্যে A4 Tech কীবোর্ডটিতে টাইপ করে খুব মজা পাওয়া যায়। আমি যত কী-বোর্ড ব্যবহার করেছি তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ করে মজা পেয়েছি এবং এই কীবোর্ড নষ্টও হয় খুব কম। তাই এই ধরণের কীবোর্ড কেনাই সবচেয়ে বেশি উত্তম বলে আমি মনে করি। তবে, অন্যান্য কীবোর্ড ও কেনা যেতে পারে
৪। মাউস : (Mouse) : মাউস : (Mouse) অর্থ নেংটি ইঁদুর। ইঁদুরের মত দেখতে এই ডিভাইসটি ব্যবহার করে আমরা সহজে এবং দ্রুত গতিতে এবং অত্যন্ত কম সময়ে কাজ করতে পারি। কানেশনের উপর ভিত্তি করে মাউসকে দুইভাবে বিভক্ত করা যায়। যেমন- সাধারণ মাউস এবং ব্লুটুথ মাউস (Bluetooth mouse). বাজারে বিভিন্ন ব্রান্ডের মাউস পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে A4 Tech (এফোর টেক) মাউসটি বেশি জনপ্রিয়। এই মাউসটি আঁটি সাঁটি এবং নস্ট হয় কম। আমার চারটি কম্পিউটারের সবগুলিতেই এই মাউস ব্যবহার করে থাকি। উপরোক্ত সুবিধাগুলির কারণে আমি এই মাউস গুলি ব্যবহার করি। তবে, অন্যান্য ব্রান্ডের মাউস ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫। প্রিন্টার (Printer): প্রিন্টার একটি আউটপুট ডিভাইস। আউটপুট ডিভাইস মানে হলো যেসব ডিভাইস দিয়ে তথ্য, চিত্র, লেখা ইত্যাদি আউট করা হয় তাকে আউপুট ডিভাইস বলে।
বাজারে বিভিন্ন ধরণের প্রিন্টার পাওয়া যায়। তার মধ্যে আমার অভিজ্ঞতায় EPSON L130 মডেলের প্রিন্টারটি বেশি ভাল লেগেছে। কারণ, আমি এই প্রিন্টারটি প্রায় দুই বছর ধরে ব্যবহার করছি। এই প্রিন্টার নষ্ট হয় কম। এর কার্টিজ (Cartridge) এ কালি জমা থাকে না। প্রিন্টারের সাথে বাহিরে চারটি কালির রং বিশিষ্ট একটি কালির ড্রাম সেট করা থাকে। কালি এনে এই ড্রামে ঢেলে দিলে সেখান থেকে প্রিন্ট হয়। তাই ঝামেলা খুব কম। তাই আমি এই প্রিন্টার কেনার জন্য রিকুয়ামেন্ট দিয়ে থাকি। তবে, বাজারে আরো অন্যান্য ব্রান্ডের ভাল প্রিন্টার আছে যা দেখে দেখে কেনা যেতে পারে।
৬। স্ক্যানার (Scanner) : ছবি, ডকুমেন্ট, লেখা ইত্যাদি কম্পিউটারে প্রবেশ করানোর জন্য স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রের প্রিন্টারের সাথে স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়। স্কানার দ্বারা ডকুমেন্ট প্রিন্ট করার পর প্রিন্ট করা যায়। ইমেইলের মাধ্যমে বা অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় শেয়ার করা যায়। এছাড়াও আরো বিভিন্ন কাজ করা যায়।
বাজারে বিভিন্ন ব্রান্ডের বিভিন্ন স্ক্যানার পাওয়া যায়। আবার কোন কোন টা প্রিন্টারসহ স্ক্যানার পাওয়া যায়। অর্থ্যাৎ ডুয়েল সিস্টেমে কাজ করা যায়। আমি বর্তমানে যে স্ক্যানার ব্যবহার করছি সেটা হলো CanoScan LiDE 120। এই স্ক্যানারটি Canon ব্রান্ডের। এছাড়াও বহু ব্রান্ডের স্ক্যানার বাজারে পাওয়া যায়।
আপনাকে ধন্যবাদ আমাদের সাইটে ভিজিট করার জন।